জ্ঞান দুই প্রকার । একটি জাহেরি এবং অপরটি বাতেনি । একটি হলো জীবনকে সুশৃঙ্খল ভাবে পরিচালনার জ্ঞান অপরটি হলো আল্লাহ তায়ালার সান্নিধ্য লাভ করার জ্ঞান । হুজুর সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেন (" আল ইলমু ইলমানি ইলমুন বিললিসানি ওয়াজালিকা হুজ্জাতুল্লাহি তায়ালা আলা ইবনে আদামা ওয়া ইলমুন বিল জিনানি ফাজালিকা ইলমুন নাফিউ" )
অর্থাৎ এলম বা জ্ঞান দুই প্রকার । প্রথমতঃ জবানি বা মৌখিক জ্ঞান ,যা বান্দাদের প্রতি আল্লাহ তায়ালার প্রমান স্বরূপ দ্বিতীয়তঃ আন্তরিক এলম , যা মনজিলে মকসুদে বা লক্ষ্য স্থলে পৌছার জন্য খুবই উপকারি।
মোরাকাবা বা ধ্যান চর্চা"
=====================================
মোহাম্মদী ইসলামের শিক্ষাটাই মোরাকাবা ভিত্তিক । আপনাকে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের পর মোরাকাবা করতেই হবে । আর ধ্যান বা মোরাকাবার শিক্ষাই ছিল রাসুল (সঃ) শিক্ষা । রাসুল (সঃ) নিজেও দীর্ঘ ১৫ বছর হেরাগুহায় ধ্যান করেছেন । আর এই মোরাকাবার দ্বারাই আত্মাকে পরিশুদ্ধ করা যায় । আর পরিশুদ্ধ আত্মার দ্বারাই আল্লাহ্র দিদার এবং নামাজে মেরাজ লাভ সম্ভব । আর এর জন্য মোরাকাবার বিদ্যা লাগবেই । আসলে যার আত্মা পরিশুদ্ধ হয় তার পক্ষে সব কিছুই জানা সম্ভব, সেটা হয় সপ্নের মাধ্যমে বা এলহামের মাধ্যমে । যাদের অন্তর পবিত্র তারা খুব সহজেই ভাল-মন্দ- খারাপ টা বুঝতে পারে । আর এ সংবাদটা পরিশুদ্ধ অন্তর থেকেই আসে ।
.
আর বিজ্ঞানও এখন প্রমাণ করছে, আসলে পরিশ্রম সৌভাগ্যের প্রসূতি হলেও, তারা বলছে, ধ্যানই সৌভাগ্যের চাবিকাঠি । আসলে এটা এখন বাস্তব প্রমাণিত । কারণ বিজ্ঞানও বলছে ধ্যান করলে মানুষের মেধাশক্তি কিভাবে বৃদ্ধি পায় । অথচ এই ধ্যানের শিক্ষাটা আমাদের রাসুল (সঃ)-ই দিয়ে গেছেন সেই ১৫০০ বছর আগে । আর সেটার প্রমাণ এখন বিজ্ঞানীরা পাচ্ছে । আর তাই তারা অকপটে স্বীকার করতে বাধ্যও হচ্ছে যে, হযরত মুহাম্মদ (সঃ) হলেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব । তারাও Muhammad Law কে সম্মান করে ।
.
মোরাকাবা অর্থ ধ্যান, গভীর চিন্তা। সুফি বা সাধু সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রচলিত বিশেষ এক তন্ময়তা বা সম্মোহিত অবস্থা। জগতের সকল ধর্মের নিগুঢ় ব্যবস্থাপত্র হচ্ছে মোরাকাবা। হযরত রসূল (স.) ১৫ বছর একাধারে হেরা গুহায় ধ্যান বা মোরাকাবা করেছেন। নবীজি (স.) হেরাগুহায় ধ্যান সাধনা করে আপন হূদয়কে আলোকিত করেছেন। তিনি সাধনার সর্বোচ্চ স্তরে উপনিত হয়ে আল্লাহর দিদার পান।
.
রসূল (স.) ফরমান, “আমার প্রভুকে আমি অতি উত্তম সুরতে দেখেছি” (তাফসীরে রুহল বয়ান)।
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত আছে, ‘বিশ্বনবী (স.) সিদরাতুল মুনতাহার সন্নিকটে আল্লাহ পাকের দর্শন লাভ করেছিলেন” (তিরমিজী)।
হযরত আদী ইবনে হাতেম (রা.) কর্তৃক বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত নবী করিম (স.) বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে এমন কেহ-ই নেই, যার সাথে অচিরেই তার প্রভু কথাবার্তা বলবেন না। সে সময় প্রভু এবং তার মাঝে কোন দোভাষী কিংবা কোন প্রতিবন্ধক থাকবে না” (বুখারি: ৬৯৩৫)।
.
নবীজি (স.) এর শেখানো পদ্ধতি তাসাওফ চর্চার ফলে সাহাবাগণের অন্তর আলোকিত হয়। তাইতো নবীজি (স.) এরশাদ করেছেন, “সাহাবাগণ নক্ষত্রতুল্য”। মোরাকাবার শিক্ষার বিষয়টি শরীয়তের চর্চার মধ্যে দেখা যায় না। এ শিক্ষা কেবল খাঁটি পীর বা আউলিয়ায়ে কেরামের মজলিসে প্রচলিত আছে। তরীকতে মোরাকাবা ছাড়া সাধনার স্তর অতিক্রম করার কোন বিধান নেই। মোরাকাবা করলে হূদয়ের কালিমা বিদুরিত হয়ে হূদয় আলোকিত হয়।
.
একজন সাধক প্রত্যহ ৫ ধরনের ফায়েজ মোরাকাবার মাধ্যমে কলবে ধারণ করেন। প্রত্যেক নামাজের ওয়াক্তে আলাদাভাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে আপন মোর্শেদের সিনাহ হয়ে এ ফায়েজ ওয়ারেদ হয়।
১. ফজরের ওয়াক্তে কুয়াতে এলাহীর ফায়েজ। এ ফায়েজ দ্বারা কলবের ৭০ হাজার পর্দার ভেতরের সমস্ত গুনাহর পাহাড় সাফ হয়। সাফ দিলে জিকিরে আনোয়ারীর ফায়েজ পড়ে কলবে ‘আল্লাহ আল্লাহ’ জিকির জারি হয়।
২. যোহরের ওয়াক্তে হযরত রাসূল (স.) এর মহব্বতের ফায়েজ। এতে নবীজির মহব্বত দিলে ভরপুর হয়।
৩. আছর ও মাগরিবের ওয়াক্তে তওবা কবুলিয়াতের ফায়েজ। এ দ্বারা সকল প্রকার গুনাহ মাফ হয়ে দিল পরিষ্কার হয়।
৪. এশার ওয়াক্তে গাইরিয়াতের ফায়েজ। এর দ্বারা নফসের কুখায়েশসহ যাবতীয় খারাবি ধ্বংস হয়ে সিজ্জিন জাহান্নামে দফা হয় এবং দিল সাফ হয়।
৫. আর রাতের তৃতীয়াংশে রহমতের ওয়াক্তের ফায়েজ। এর ফলে দিল আল্লাহর রহমতে ভরপুর হয়।
.
এভাবে সকল ওয়াক্তের মোরাকাবায় দিলের মধ্যে ফায়েজ পড়ে দিল সাফ হয়। মোরাকাবার জন্য অতি উত্তম সময় হচ্ছে রাতের শেষ প্রহরে রহমতের সময়। এ সময় প্রকৃতি থাকে নিরব, পরিবার পরিজনও থাকেন ঘুমিয়ে। এমন সময়টাই মোরাকাবার জন্য বেছে নেন সাধকগণ। এ সময় আল্লাহপাক বান্দার ডাকে অধিক সাড়া দেন। তিনি বান্দাকে অনুপ্রাণিত করতে থাকেন, তাঁকে ডাকতে বলেন, তাঁর ইবাদত করে তাঁর নৈকট্যলাভের আহ্বান করেন।
.
হযরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রসুল (স.) বলেছেন, “আমাদের প্রতিপালক প্রতি রাতের যখন শেষ তৃতীয়াংশ অবশিষ্ট থাকে তখন প্রথম আসমানে অবতরণ করেন এবং বলতে থাকেন, হে বান্দা আমার কাছে প্রার্থনা কর, আমি তোমার প্রার্থনা কবুল করব। আমার কাছে তোমার কি চাওয়া আছে, চাও, আমি তা দান করব। আমার কাছে তোমার জীবনের গুনাহর জন্য ক্ষমা প্রার্থনা কর, আমি তোমার গুনাহ মাফ করে দেব” (বুখারী : ৬৯৮৬)।
.
মোরাকাবা হল নফল ইবাদত। নফল ইবাদত হল আল্লাহর নৈকট্য লাভের উত্তম পন্থা। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ বলেন, “যখন আমার বান্দা নফল ইবাদত দ্বারা আমার নৈকট্য লাভ করে, তখন আমি তাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করি, এমতাবস্থায় আমি তার কর্ণ হই, যদ্বারা সে শ্রবণ করে; আমি তার চক্ষু হই, যদ্বারা সে দর্শন করে; আমি তার হাত হই, যদ্বারা সে ধারণ করে; আমি তার পদযুগল হই, যদ্বারা সে হেঁটে বেড়ায়। এমন অবস্থায় সে আমার কাছে যা কিছু চায় আমি সঙ্গে সঙ্গে তা দান করি” (বুখারি : ৬০৫৮)। তাই মোরাকাবা সাধকের জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। মোরাকাবা অন্তরের কালিমাকে পরিস্কার করে দেয়। যার হূদয়ের কালিমা বিদূরিত হয়েছে, সে নামাজে আল্লাহর সাথে কথোপকথন করে। তাই প্রতি ওয়াক্ত নামাজ ও এবাদতের শেষে অন্তত ২ মিনিটের জন্য হলেও নিয়মিত মোরাকাবা অব্যাহত রাখা উচিত। তাহলেই সাধক ধীরে ধীরে আল্লাহর নৈকট্যে পৌঁছে যেতে সক্ষম হবেন।
.
হযরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) থেকে বর্ণিত, হযরত নবী করিম (স.) তাঁর রবের কাছ থেকে বর্ণনা করেন- আল্লাহ বলেছেন, “বান্দা যখন আমার দিকে এক বিঘত অগ্রসর হয়, আমি তখন তার দিকে এক হাতপরিমাণ অগ্রসর হই। আর সে যখন আমার দিকে এক হাতপরিমাণ অগ্রসর হয়, আমি তার দিকে দু হাত পরিমাণ অগ্রসর হই। আর বান্দা যদি আমার দিকে হেঁটে আসে, আমি তার দিকে দৌড়ে যাই” (বুখারি : ৭০২৮)।
.
মোরাকাবা করার প্রথম শর্ত হল দু‘চোখ বন্ধ করে নেওয়া। অত:পর তরীকতের ওয়াজিফা মোতাবেক ধ্যানে নিমগ্ন হওয়া। জাহেরি দুচোখে বন্ধ করে নামাজের মত বসে খেয়াল কলবে ডুবিয়ে মোরাকাবা করতে হয়। মোরাকাবা করলে কলবের চোখ খুলে যায়। ইবাদতে জাহেরী চোখ বন্ধ করলেই কেবল বাতেনী চোখ খোলে। মোরাকাবা করার প্রারম্ভে দরকার খাঁটি মোর্শেদের সাহচর্য। পবিত্র কোরআনের বহু স্থানে এ বিষয়ে সুস্পষ্ট নিদের্শনা আছে। এরশাদ হয়েছে, “ওহে যারা ঈমান এনেছ, তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সাদেক্বিনদের বা সত্যবাদীদের সঙ্গী হয়ে যাও” (সূরা তাওবাহ: ১১৯)। মারেফত ছাড়া বাতেনী রাস্তার অনুসন্ধানী হওয়া যায় না। যে কোন বিষয়ে অনুসন্ধানী হলে যেমন বিশাল অর্জন সম্ভব হয়, ঠিক তেমনি আল্লাহর পথের অনুসন্ধানী হলে আল্লাহওয়ালা বা মোমেন হওয়া যায়। মানুষের দিল হচ্ছে মহাভেদ ও বাতেনের দরিয়া। একজন ডুবুরি যেমন গভীর সমুদ্রে ডুব দিয়ে তলদেশ থেকে মণি-মাণিক্য তুলে আনেন, তেমনি মানুষও তার দেলের মধ্যে ডুবে জগতের সবচে মুল্যবান রত্ন আবিষ্কার করতে পারেন। আল্লাহকে পাওয়ার জন্য অনেকগুলো সাধনা রয়েছে, তন্মেধ্যে অন্যতম হচ্ছে মোরাকাবা। সুতরাং মোরাকাবার মাধ্যমেই স্রষ্টা ও সৃষ্টির মাঝের ভেদ ও রহস্য উন্মোচন করা সম্ভব।
.
ধ্যান-মুরাকাবার গুরুত্ব সম্পর্কে পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন, “নিশ্চই আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টিতে, দিন-রাত্রীর আবর্তনে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শন রয়েছে। তারা দাড়িয়ে, বসে বা শায়িত অবস্থায় আল্লাহর স্মরণ করে, তারা আকাশ ও পৃথিবীর সৃষ্টি রহস্য নিয়ে ধ্যানে (তাফাক্কুর) নিমগ্ন হন এবং বলে, হে আমাদের প্রতিপালক! তুমি এসব নিরর্থক সৃষ্টি কর নি”। [সূরা আলে-ইমরান ১৯০-১৯১]
উক্ত আয়াতে “তাফাক্কুর” মানে হল গভীর ধ্যান, ইংরেজিতে মেডিটেশন বা কনটেমপেশন। জীব-জগৎ ও মুক্তির পথ অনুসন্ধান লাভের জন্য এই গভীর মনোনিবেশ এই আত্মনিমগ্নতার নির্দেশ আল্লাহ কুরআনের একাধিক জায়গায় দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন
কেন তোমরা ধ্যান বা গভীর মনোনিবেশ সহকারে -ভাবনা কর না?
এমনকি নবীজী সা. কে আল্লাহপাক বলেছেন, অতএব (তুমি দৃঢ়তার সাথে কাজ কর আর) যখনই অবসর পাও প্রতিপালকের কাছে একান্তভাবে নিমগ্ন হও। [সূরা ইনশিরাহ:৭-৮]
.
রাসুল সা. কারো উপর কিছু চাপিয়ে দেন নি। ধ্যানের গুরত্ব সম্পর্কে হযরত আবু হুরাইরা থেকে বর্ণিত এক হাদীসে উল্লেখ আছে, নবীজী সা. বলেন, “সৃষ্টি সম্পর্কে এক ঘন্টার ধ্যান ৭০ বছর নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম। [মেশকাত শরীফ, তাফসীর হাক্কি : ১৩/৩২৪] হযরত ইবনে আব্বাস হতে বর্ণিত, নবীজী সা. বলেন, এক ঘন্টার ধ্যান (তাফাক্কুর) সারা বছরের ইবাদতের চেয়ে উত্তম। [তাফসীরে হাক্কি : ১৩/৩২৪]
.
ধ্যানের বহুমুখী গুরত্বের তাগীদে মহাপুরুষ, অলি-আওলিয়াগণ ধ্যানে নিমগ্ন হয়েছেন। ইমাম গাজ্জালী রহ. এ ধ্যান-চর্চার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। হযরত মাওলানা জালালুদ্দিন রুমি রহ. যিনি বিশেষ পদ্ধতির মোরাকাবার উদ্ভাবক। একদা তিনি গোলাপ বাগানে ধ্যানমগ্ন ছিলেন। নব্যবিবাহিত এক দম্পতি বৃদ্ধ সাধককে বাগানে দেখে কিছুটা বিরক্তি প্রকাশ করে বলে, এ বৃদ্ধ বাগানে চোখ বন্ধ করে কি করছে? মাওলানা রুমি বলেন, আমি চোখ বন্ধ করে যা দেখি, যদি তোমরা তা দেখতে, আমি তো মাঝে মাঝে চোখ
খুলি, তোমরা তাও খুলতে না।
.
নবীজী সা. এর ধ্যানচর্চা প্রসঙ্গে বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবিদ ড. তারিক রামাদান তার ঞযব গবংংবহমবৎ: ঞযব গবধহরহম ড়ভ গড়যধসসধফ বইতে বলেছেন: “ঐব ফরফ হড়ঃ ফবসধহফ যরং পড়সঢ়ধহরড়হং যব ড়িৎংযরঢ় ভধংঃরহম ধহফ সবফরঃধঃরড়হ ঃযধঃ যব বীধপঃবফ ড়ভ যরসংবষভ” অর্থাৎ তিনি যেভাবে ইবাদত করতেন রোজা রাখতেন এবং মেডিটেশন (ধ্যান) করতেন, তিনি তার অনুসারীদের উপর কঠোরভাবে চাপিয়ে দিতে চাননি। তিনি অনুগামিদের ব্যাপারে নরম ছিলেন।
.
মুরাকাবা বা ধ্যান কি? যুগে যুগে ধ্যানের ধরন বা প্রক্রিয়া ভিন্ন ভিন্ন হয়েছে, তবে ধ্যান হচ্ছে এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে অস্থির ক্বালব বা মনকে স্থির ও প্রশান্ত করা হয়, মনকে দিয়ে বড় কিছু করানোর প্রস্তুতি ও প্রক্রিয়া। ধ্যান মনকে নফস বা প্রবৃত্তির শৃংখল মুক্ত হতে সাহায্য করে এবং তাকওয়াবান হতে সহায়তা করে। ঠান্ডা মাথায় অবচেতন মনের শক্তিকে অধিক পরিমাণে ব্যবহার করে নিজের ও পরের কল্যাণ করা যায়। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে, মানুষের ৭৫% রোগ হচ্ছে মনোদৈহিক বা সাইকোসোমাটিক। এসব রোগ বা অসুখ মনের জট খুলে ফেললেই নিরাময় লাভ সম্ভব। এ ক্ষেত্রে বুখারি শরীফের একটি হাদীস বিশেষভাবে উলেখযোগ্য- নবীজী সা. বলেন, শরীরে ভিতর একটি ক্বালব বা মন আছে, তা ভালো থাকলে দেহ ভালো থাকে আর যখন তা খারাপ বা অসুস্থ হয়ে যায় তখন সারাশরীর খারাপ বা অসুস্থ হয়ে যায়। [বুখারি, মুসলিম]

নফল নামাজের সময় সূচী ও ফায়দা
১। সালাতুল এশরাক [নফল]
সূর্য উঠার ১৫/২০ মিনিটের মধ্যে ২+২= ৪ রাকাত
ফায়দা ==>> কবুল
ও ওমরা হজ্জের দুইটি সওয়াব দান করা হইয়াছে।
২। সালাতুল চাশত
৪ বা ৬ বা ৮ রাকাত পর্যন্ত পড়া যায় ।
ফায়দা==>>এই
নামাজের ৫ টি ফায়দা
(ক)অন্ন (খ) বস্ত্র (গ) শিক্ষা (ঘ) বাস স্থান
(ঙ)চিকিৎসা
৩। সালাতুল আওয়াবিন
মাগরিবের নামাজের ফরজ ও সুন্নত নামাজের পরে
এই নামাজ পড়িতে হইবে । ২+২+২=৬ রাকাত
ফায়দা ==>>বিগত
কাযা নামজের সমস্ত গুনাহ মাফ করিয়া দেওয়া হইবে।
৪। সালাতুল তাসবী
এশার নামাজের
পূর্বে পড়িতে হইবে।
২+২=৪ রাকাত ৩০০ শত বার তাসবি মনের বাসনা পূর্ণ হওয়ার নামাজ।দাঁড়াইয়া
১৫ বার সুবহান আল্লাহ ওয়ালহামদলিল্লাহ ওয়ালাইলাহা ইন্নাল্লাহু আল্লাহু আকবর রুকুতে ১০ বার ,সেজদায় ১০ বার , মাথা সোজা করে ১০
বার আবার সেজদায় ১০ বার ,মাথা তুলিয়া ১০ বার
সেজদায় ১০বার ==৭৫ বার এক রাকাতে
৫। সালাতুল হাজত
এশার নামাজের পর পড়তে হইবে।
২+২= রাকাত
ফায়দা==>> মনের ইচ্ছা পূর্ণ হইবার নামাজ
৬। সালাতুল তাহাজ্জত
১২ রাকাত রাত্রে ১২ ঘতিকার পর পড়িতে হইবে।
ফায়দা==>> হুজুর পাক (সাঃ) এর সঙ্গে
সাক্ষাৎ লাভ
৭।সালাতুল রহমত
২ রাকাত তাহাজ্জতের পর পরিতে হয় ।
ফায়দা ==>> বান্দার জন্য ৪ টি রহমতের দরজা খুলিয়া দেওয়া হয় ।
৮। সালাতুল হজ্জ
২ রাকাত সালাতুল রহমতের পর
ফায়দা==>> ৪০ দিনের মধ্যে মক্কা মদিনা জিয়ারত লাভ হইবে।
৯। সালাতুল এশতেখার
২ রাকাত
সালাতুল হজ্জের পর
ফায়দা ==>> এই নামাজে নিজেকে
জানা যায়।
0 মন্তব্য(গুলি):
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন